ইংরেজি শেখার সহজ উপায় | ৯ টি কার্যকর উপায় অবশ্যই আপনাকে Fluent Speaker বানাবে!

ইংরেজি শেখার সহজ উপায়

আচ্ছা, আপনি ইংরেজি শেখার সহজ উপায় সম্পর্কে জানতে চান তাই না? আমি ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক করছি এবং এখন বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং-এ ইংরেজি পড়াই। আমিও ঘরে বসেই ইংরেজি শিখেছি এবং আমি সাবলীলভাবে ইংরেজিতে কথা বলতে পারি। আলহামদুলিল্লাহ।  তাই আমি যেভাবে ইংরেজি শিখেছি ঠিক তাই আপনার জন্য লিখছি।

১. নিজেই ভালো উপায় খুঁজে বের করা:

কেউ একজন আপনাকে বলল, ইংরেজি শেখার প্রতিদিন এক ঘন্টা করে ইংরেজি মুভি, সিরিয়াল দেখবে, তাহলে খুব সহজে ইংরেজি শিখতে পারবে। তো তার কথা শুনে আপনিও ইংলিশ মুভি দেখা শুরু করলেন। কিন্তু একটা সমস্যা হলো। আপনি সিনেমাটা দেখেই যাচ্ছেন কিন্তু আগাগোড়া কিছুই বুঝলেন না। দিনশেষে ফলাফল আগের আপনি আগের মতোই রয়ে গেলেন। না, এভাবে সময় নষ্ট করবেন না। এর চেয়ে আপনার যেভাবে ভালো লাগে সেভাবে চেষ্টা করুন। যেমন: আপনার হয়ত গল্প পড়তে ভালো লাগে তাহলে ইংরেজিতে গল্প পড়ুন। লেকচার, গান, গল্প, কবিতা শুনতে ভালো লাগে, ইংরেজিতে শুনুন।

২. ভোকাবুলারি শিখুন :

এখন, আমি আপনাকে বললাম ভোকাবুলারি শিখতে। তাই আপনি একখানা বিশাল ডিকিশনারি নিয়ে মন দিয়ে  পড়া শুরু করলেন। এমনটা কখনোই করবেন না। এরচেয়ে যখনই আপনি কোন ইংরেজি শব্দ দেখবেন তার অর্থ অনুমান করুন। পরবর্তীতে তার অর্থ ডিকশনারিতে দেখে নিন এবং আপনার নোট খাতায় লিখে রাখুন। মুখস্ত করার প্রয়োজন নেই।

শুধু শব্দ না, Phrase & Preposition শেখা:

ইংরেজি যাদের ফার্স্ট ল্যাংগুয়েজ তাদের সাথে অন্যদের পার্থক্য শুধু ফ্লুয়েন্সিতে না। বরং শব্দচয়ন এবং কথার ধরণেও। একদম সঠিক গ্রামার আর ভোক্যাবুলারি ব্যবহার করে কথা বললেও দেখা যায়, একজন নেটিভ Speaker এর সাথে কিছুটা পার্থক্য থেকেই যায়।

আমরা সবাই কিন্তু স্বাভাবিকভাবেই মোটামুটি ভালো সংখ্যক Vocabularies, Phrases & Preposition জানি। এরপরও আমরা কথা বলতে পারি না। কেন জানেন? কারণ, আমাদের আরেকটা সমস্যা হলো, বাক্য গঠন করতে না পারা। কারণ আমরা সঠিকভাবে Preposition এর সঠিক ব্যবহার জানি না। তাই Preposition এর সঠিক ব্যবহার শিখুন। কথা বলা এমনিতেই সহজ হয়ে যাবে। আমি শুধু ছোট্ট করে বলি, Preposition একটা শব্দের সাথে আরেকটা শব্দকে যুক্ত করে। এখন চিন্তা করুন কথা বলতে গেলে আমাদেরকে কত ধরনের শব্দ যুক্ত করে বাক্য তৈরী করতে হবে!

৩. লজ্জা বা ভয়কে জয় করতে হবে!


সবকিছু তো হলো, ভোকাবুলারি জানলাম, নিয়ম জানলাম এরপরও কথা বলতে পারি না কেন? কারণ, শেখার পরে আপনি এখনো কথা বলতে শুরু করেননি। চিন্তা করছেন, আরেকটু শিখি তারপর একদম  পার্ফেক্টলি কথা বলতে শুরু করব।

না! আপনি উল্টোটা করবেন। যা জানেন সেইটা দিয়েই শুরু করুন কথা বলা। অদক্ষ হয়ে শুরু করবেন এবং আস্তে আস্তে পার্ফেক্ট হবেন। এইটা হলো, শেখার নিয়ম।

৪. শর্টকাট পদ্ধতি অনুসরণ না করা:

এক্ষেত্রে, শেখার এই পুরো জার্নিতে আমাদের মোটেও সর্টকাট পথ ধরা উচিৎ না।  আপনি অমুক দিন লাইব্রেরিতে গিয়ে একখানা বই দেখলেন। বইয়ের নাম মাত্র ত্রিশ দিনেই ইংরেজি শিখুন। এরপর বইখানা আপনি কিনে নিলেন এবং পড়ে ইংরেজি শিখে গেলেন। আরেএএ.. এভাবে আপনি কখনোই শিখতে পারবেন না। শর্টকাটে, সহজে স্থায়ী সফলতা মেলে না। ইংরেজি শিখতে হলে আপনাকে ধৈর্য সহকারে অল্প অল্প করে আগাতে হবে। আশা করা যায় তবেই আপনি সাফল্য পাবেন।

তবে আপনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রী এবং বর্তমানে অক্সফোর্ডে পড়ুয়া মুনজেরিন শাহিদ আপুর :  বইটি নিতে পারেন। আমি নিজেও এটি রেখেছি।

৫. নিয়মিত চর্চা করুন : ইংরেজি শেখার সহজ এই উপায়

তো আপনি উপরোক্ত পয়েন্টগুলো পড়ে সপ্তাহে একদিন খুব মনোযোগ সহকারে দশ ঘন্টা পড়লেন। কিন্তু সপ্তাহের বাকি দিনগুলোতে আপনি ইংরেজির ‘ই’ টাও চর্চা করলেন না। এইভাবে তো কখনোই শেখা হবে না। তার চেয়ে বরং দশ ঘণ্টার পরিবর্তে প্রতিদিন দশ মিনিট সময় দিন। মাত্র দশ মনে মিনিট! কী  অবাক হচ্ছেন? শুরু করুন,  নিজের উন্নতি নিজেই টের পাবেন। আর কেমন চলছে তা আমাকে জানাতে পারেন এখানে : Dh Shishir

প্রশ্ন হলো কী আর কীভাবে চর্চা করবেন?


এতক্ষণ যা বলেছি তাইই চর্চা করতে হবে। চলুন আরেকবার ওভারভিউ দেখে নিই:
ক. বেশি বেশি করে ইংরেজি বিষয়ের কিছু রিডিং পড়তে হবে । এতে আপনার অনেক ইংরেজি শব্দ আত্তস্থ হবে।
খ. ইংরেজি শুনতে হবে । আপনি তা বিভিন্ন মাধ্যমে করতে পারেন। যেমন,TV,Radio,english movie etc.
গ. ইংরেজিতে কথা বলার চেষ্টা করুন । সেটা আপনি অন্যের সাথেও করতে পারেন বা মনে মনে। আপনি এমনটাও করতে পারেন যে, রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন হঠাৎ কিছু দেখলেন তার বিষয়ে ইংরেজিতে কথা বলার চেষ্টা করুন। যেমন, পাখি, গাছ, গাড়ি, ফুল।
ঘ. ইংরেজি লিখতে হবে । আপনি কোনো একটা বিষয় স্থির করুন এবং তার উপর কিছু বাক্য লিখুন। ভুল হলে সমস্যা নাই। চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে গুগল ট্রান্সলেটর ব্যবহার করে বাংলা থেকে ইংরেজিতে ট্রান্সলেট করে দেখুন তারপর সেটা লিখে ফেলুন। আপনি যে জানলেন,  এটাই গুরুত্বপূর্ণ।

৬. মজা করে করে পড়ুন, শিখুন:

কঠিনভাবে চিন্তা না করে এটাকে একটা মজার বিষয় হিসেবে নিন। যেখানে প্রতিদিন শেখাটাই হবে মজা। হাতের কাছের মোবাইলটাতে সার্চ দিলেই এমন কিছু ভিডিও পেয়ে যাবেন যেগুলোতে ইংরেজির কঠিন টার্মগুলো চমৎকার ভাবে উপস্থাপন করা হয়। সময় পেলে সেগুলো আনন্দের সহিত দেখুন।

আপনি সব ইংরেজি জানেন কিন্তু কথা বলতে গেলে আটকে যান। তাহলে তো আর ইংরেজি জানার কোনো লাভই হল না। আপনাকে নিয়মিত চর্চা করতে হবে কথা বলা। একই লক্ষ্য নিয়ে ইংরেজি শিখা বন্ধু বান্ধব থাকলে সুবিধে হয়। আর না পেলে অনলাইনে বিভিন্ন অ্যাপ আছে যেগুলো আপনাকে অন্যদের সাথে ইংরেজি চর্চা করার সুযোগ করে দেবে। চাইলে আয়নাকেও নিজের বন্ধু বানাতে পারেন।

৭. সংকোচ কাটিয়ে তোলা

একা একা বেশ কিছুদিন প্র্যাকটিস করার পর । আমাদের মনে হতে পারে যে, এখন আমরা অন্যদের সামনেও একইভাবে না আটকে ইংরেজিতে কথা বলে যেতে পারবো। কিন্তু আসলেই যখন সময় আসে অন্যের সামনে বলার তখন পারি না। প্রশ্নটি হচ্ছে, কেন?

কারণ, আমাদের কাছে মনে হয়, যদি কোন ভুল হয় তাহলে সামনের মানুষটার সামনে আমাকে লজ্জায় পড়তে হবে। আমাদের কোন ভুল কেউ ধরুক, খুব স্বাভাবিকভাবেই আমরা তা চাই না । কিন্তু, এই ভয় বা লজ্জাটাই আমাদের অনেকখানি পিছিয়ে দেয়। তাই, সব ভয় বা লজ্জা কাটিয়ে উঠে আমাদের বলতে হবে। প্রয়োজনে ধীরে বলবো। পরের বাক্যটা বলার আগে একটু চিন্তা করে নিবো। কিন্তু বলবো। যদি ভুল হয়েও যায়, থামা যাবে না। আবার শুরু করতে হবে।
ইংরেজি বলার পিছনে সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে কাজ করে আমাদের এই সংকোচ। তাই, যাই হোক না কেন, আমাদের এই সংকোচ কাটিয়ে উঠতে হবে।

৮. Grammar নিয়ে বেশি চিন্তা না করা:

ইংরেজিতে কথা বলা নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয় গ্রামার নিয়ে। দেখা যায়, Grammar নিয়ে এমনিতে কোন সমস্যা নেই। নির্ভুল গ্রামারে লিখে যেতে পারছি। কিন্তু বলতে গেলেই গ্রামারে টুকটাক ভুল হয়েই যাচ্ছে। এবং তখনই আমরা থেমে যাচ্ছি। থামছি না?
এ কারণেই, প্র্যাকটিসের সময় Grammar নিয়ে বেশি মাথা ঘামানো যাবে না। ভুল হচ্ছে? হোক! কথা বলা থামানো যাবে না। গ্রামারের ভুলগুলো যতদিন যাবে কমে আসবে। কিন্তু, গ্রামারের কথা ভেবে যদি বলা থামিয়ে দেই, তবে ফ্লুয়েন্সি কখনোই আসবে না।

৯. ইংরেজিতে চিন্তা করতে চর্চা করুন

আমাদের অনেকেই ইংরেজিতে কথা বলতে গিয়ে তিন থেকে চার স্তর পার করে মুখ দিয়ে কথা বের করি। যেটা আমাদের ইংরেজিতে অনেক বড়ো প্রভাব ফেলে। কিন্তু একবার ভাবুন তো, বাংলায় কথা বলতে কতো ধাপ পার করতে হয়? যা মনে আসে তাই বলা যায়। এটা একদিনে তো আর হয় নি। আমরা ছোট বেলায় একটা বিশাল সময় আগে শুনেছি, অবজার্ভ করেছি, কোনটার জন্য কী বলে তা অনুধাবন করেছি তারপর একটু একটু করে বলতে চেষ্টা করেছি, মাম মাম, আব আব, আব্বু, আম্মু দাদা তাই না?

তাই এভাবেই সময় নিয়ে আস্তে আস্তে চর্চা করতে থাকুন। ইনশাআল্লাহ, সফলতা আপনার আসবেই। আশা করছি ইংরেজি শেখার সহজ উপায় যেগুলো বললাম  এই ৯ টি উপায়ই আপনার ইংরেজি শেখার জার্নিতে গুরুত্বপূর্ণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

Share with Friends

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top